– প্যমেলিয়া রিভিয়ের
পাঠ্যক্রম এবং শিক্ষাদান বিশেষজ্ঞ, শান্তি এবং সংঘর্ষ শিক্ষাবিদ ও লেখক।
টরেন্টো,কানাডা।
অনুবাদ : মশিউর আনন্দ
সাম্প্রতিক কালে বিজ্ঞান শিক্ষকদের উপর হামলা, নারী শিক্ষাবিদদের অভিযোগ এবং সাম্প্রদায়িক সংঘাত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিজ্ঞান সাক্ষরতার দূর্বলতা নির্দেশ করে। বাংলাদেশের বিজ্ঞান পাঠ্যক্রম, বিজ্ঞান শিক্ষাদান পদ্ধতি এবং শেখার প্রক্রিয়ার মাঝে অনেক ফাঁক রয়েছে। যা থেকে সমাজে সুত্রপাত হয়েছে বিজ্ঞান নিয়ে সহিংসতা ও বিভিন্ন ধরনের সংঘর্ষ। বাংলাদেশে বিজ্ঞান শিক্ষাবিদদের উপর হামলা, বিজ্ঞান বিশ্বাসীদের, বিজ্ঞান ব্লগারদের এবং বিজ্ঞান লেখকদের হত্যা নতুন কিছু নয়। এমন কি ভিন্ন বর্ণের, ভিন্ন ধর্মের এবং অন্নান্য লিঙ্গের মানুষদের মেরে ফেলা ধর্মান্ধতা, সঠিক বিজ্ঞান পাঠ্যক্রম, এবং সঠিক পদ্ধতিতে বিজ্ঞান শিক্ষার অভাব ইঙ্গিত বহন করে!
মনে রাখতে হবে, ধার্মিক আর ধর্মান্ধ দুটি বিষয় এক নয়, ধার্মিকতা মানুষকে সত্য সন্ধানে ও জ্ঞান প্রসারে সহায়তা করে এবং আলোর পথে নিয়ে যায়, কিন্তু ধর্মান্ধতা মানুষকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দেয়।
এই মুহুর্তে বাংলাদেশে, লক্ষ লক্ষ শিশু কোভিড এবং দারিদ্র্যের জন্য স্কুলের বাইরে রয়েছে। তার উপরে, লক্ষ লক্ষ প্রাপ্তবয়স্কদের (যুব গোষ্ঠী এবং বয়স্ক) মধ্যে নিরক্ষরতার সমস্যা রয়েছে। সম্ভবত, কিছু ধর্ম বিশ্বাস ভিত্তিক শিক্ষা যা পরিবার থেকে শিশুরা শেখে, বাড়িতে সামাজিকীকরণ শিক্ষা পদ্ধতি, এবং প্রাথমিক (শিশু দের বিজ্ঞান ১- ৬) ও নিম্ন মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় (গ্রেড ৭- ৮) অপর্যাপ্ত বিজ্ঞান শিক্ষা, ভবিষ্যতে বিজ্ঞান বোঝার (বিভিন্ন বিষয়ের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা বোঝার) ক্ষেত্রে বিরোধ সৃষ্টি করতে পারে। উপরিউক্ত বিষয় গুলু পর্যালোচনা এবং পদক্ষেপ নেয়া দরকার সমাজে সংঘর্ষ এড়াতে হলে।
কারন বিজ্ঞানের মতো একটি যুক্তিপূর্ণ বিষয় হাতে কলমে শেখানো (ব্যবহারিক পদ্ধতি) এবং পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে না পড়ানো হলে এটি দেশের সামাজিক-সাংস্কৃতিক পরিবেশের ভারসাম্যহীনতার কারণ হতে পারে। বিভ্রান্ত শিশুরা এমন কি মানসিক বৈকল্যতার শিকার হতে পারে।
উপরন্তু, অধিকাংশ বাংলাদেশী শিশুরা বিজ্ঞানের জ্ঞানের উৎস (বিশেষ বিজ্ঞান বিষয়ের বিরোধপূর্ণ ধারণা) সম্পর্কে পূর্বকল্পিত ধারণা নিয়ে স্কুলে আসে। তাঁরা তাদের বাড়ি (পিতামাতা/ পরিবার), সহপাঠী এবং সমাজ থেকে জ্ঞান সংগ্রহ করে। উদাহরণ স্বরূপ, শিক্ষার্থীরা বিদ্দ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তকে বর্ণিত বিবর্তনীয় তত্ত্ব সমূহের (প্রজাতির উৎপত্তি, পৃথিবীর উৎপত্তি এবং মহাবিশ্বের উৎপত্তি) বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা এবং ধর্মীয় ব্যাখ্যা বা ধর্মীয় জ্ঞান (যাকে ইসলামিক বিজ্ঞান, স্থানীয় জ্ঞানতত্ত্ব বলা হয়) নিয়ে বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে।
আমরা জানি যে, বাংলাদেশে একটি জটিল সামাজিক চিত্র পরিলক্ষিত হয়। যেখানে একটি বহুসংস্কৃতি (বহুধর্মীয়) জাতি রয়েছে এবং যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান। তাই, অজ্ঞতা হ্রাস করতে এবং শান্তি বজায় রাখতে, সরকারকে অবশ্যই মনোযোগ দিতে হবে প্রাথমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা কীভাবে বিজ্ঞানের উপর আরও বেশি প্রতিফলিত হতে পারে। এবং শিশুরা বিজ্ঞান শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত হতে পারে। কিন্তু, শুধু শ্রেণিকক্ষে বিজ্ঞান শিক্ষা পাঠদানের মাধ্যমে বিজ্ঞান সাক্ষরতার উন্নয়ন, অথবা সামাজিক দ্বন্দ্ব নিরসন অসম্ভব।
সহিংসতা এবং সংঘর্ষ সমস্যা সমাধানের জন্য শ্রেণিকক্ষে বিজ্ঞান শিক্ষা একমাত্র বিকল্প নয়। আজকাল জনপ্রিয় শিক্ষা পদ্ধতিকে (popular education method) সমাজ পরিবর্তনের জন্য একটি উত্তম শিক্ষা পদ্ধতি হিসেবে বিবেচনা করা হয় । জনপ্রিয় শিক্ষা পদ্ধতি সমাজ পরিবর্তনের জন্য” (popular education method for a social change) যা কিনা শিশুদের এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য উন্নত বিজ্ঞান শিক্ষার প্রচলন (বিজ্ঞান সাক্ষরতার জন্য “জনপ্রিয় শিক্ষা” পদ্ধতির ব্যবহার) এবং একটি সমাজ পরিবর্তনের জন্য উপযোগী পদ্ধতি হিসেবে সহায়ক হবে।
জনপ্রিয় শিক্ষা পদ্ধতি বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করার অনুপ্রেরনা দেয় যেমন: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার (দূরদর্শন, বেতারযন্ত্র) করে শিশুদের এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য বিজ্ঞান শিক্ষার প্রচলন করা । “জনপ্রিয় শিক্ষা পদ্ধতি” (রঙ্গচিত্র, নকশা, ব্যঙ্গাত্মক চিত্র ব্যবহার, গল্প বলা, ছবি দেখা) বিজ্ঞান এবং বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা দিবে এবং বিজ্ঞান সম্পর্কে ভুল ধারণাকে দুর করতে সহায়তা করবে। এবং এই শিক্ষা পদ্ধতি সমাজে সচেতনতা বিকাশে সহায়তা করবে।
ধরুন, বাবা, মা দুজনেই নিরক্ষর এবং দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের ভূমিকা(role of science in everyday life) সম্পর্কে সে অজ্ঞ অথবা ন্যূনতম বিজ্ঞান বিষয়ক জ্ঞান নেই । সেক্ষেত্রে
শিশু ও যুবকদের বিজ্ঞান শিক্ষা প্রক্রিয়ার উপরে, পিতামাতার বিজ্ঞান বিষয়ক জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার গভীর প্রভাব পড়বে । এবং আমরা জানি যে, অজ্ঞতা সবসময় সুখকর নয়। বা আশীর্বাদ বহন করেনা ।
টিএসসিতে নামাজের কক্ষ নিয়ে বিতর্ক:
পশ্চিমা বিশ্বে অনেক বিদ্যালয়ে এবং চিকিৎসালয়ে একটি প্রার্থনা কক্ষ আছে। হাসপাতালের প্রার্থনা কক্ষ সবধর্মের মানুষের জন্য। মা-বাবা ও আত্মীয়-স্বজনরা ঐ ঘরে বসে তাঁদের অসুস্থ সন্তান, মা-বাবা বা আত্মীয় -স্বজনের জন্য দোয়া করেন। খ্রীষ্টীয়, ইহুদি, হিন্দু বা মুসলিম ধর্ম যাজকদের ( ইমামদের) প্রার্থনা ও আশীর্বাদের জন্য হাসপাতালে আসার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, ডাক্তাররা অনেক সময় পিতামাতার মানসিক শান্তির জন্য, রোগীর বালিশের নিচে ধর্ম সঙ্ক্রান্ত বুকলেট রাখার অনুমতি দেন। আমি মনে করি সবার জন্য প্রার্থনার জন্য একটি কক্ষ রাখায় তেমন কোনো ক্ষতি নেই। বিদ্যালয়ে এবং চিকিৎসালয়ে এই ধর্ম বিশ্বাস-কেন্দ্রিক বিষয়টি ইঙ্গিত করে যে আধ্যাত্মিকতার মূল ধারণাটি ছাত্রদের জীবনের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ।
আধ্যাত্মিকতা এবং ধর্ম বিশ্বাস পশ্চিমা বিশ্বে অস্বীকার করা হয় না বরং এটিকে মানুষের অধিকার বলে মনে করা হয় । কারণ আধ্যাত্মিকতা এবং ধর্ম বিশ্বাস অনেক মানুষের জন্য অত্যাবশ্যক। আমরা বলতে পারি দোয়া বা প্রার্থনা অর্থাৎ নামাজ/ উপাসনা এবং ঔষধ উভয়ই অসুস্থ ব্যক্তি এবং তাঁদের পরিবারের (ধর্ম বিশ্বাসীদের) মানসিক শান্তির জন্য কাজ করে। সুতরাং, প্রার্থনা কক্ষের জন্য শিক্ষার্থীদের দাবিকে অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা যেতে পারে। প্রার্থনা কক্ষটি সকল ধর্মের ছাত্র, ছাত্রিদের জন্য (উপাসনা, ধ্যান-নামাজ/সালাত) নীরবে উপাসনার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।
কিন্তু কক্ষ টি কখনোই যুদ্ধের জায়গা হিসাবে পরিণত হওয়া উচিত নয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে, মুসলিম প্রধান দেশ হিসেবে, সম্প্রীতি বজায় রাখা একটি কঠিন বিষয়, বিবাদ মুলক, বা আপত্তি কর বিষয় মনে হতে পারে। কারণ এখানে অধিকাংশ মানুষ বহুসংস্কৃতির ধারণাকে হৃদয় থেকে লালন করে না, এবং অন্যান্য ধর্মের মানুষদেরকে যথেষ্ট সম্মান করে না। সুস্থ শিশু, সুনাগরিক, এবং সুস্থ সমাজ গঠন করার জন্য এই অবস্থার পরিবর্তন হওয়া দরকার।
সংস্কৃতি হচ্ছে আমরা কি ব্যবহার করি এবং আমরা কে?
সাধারণ মানুষ সংস্কৃতি বলতে যা বুঝে থাকে সমাজতত্ত্বের ভাষায় তা বুঝানো হয় না। সমাজতত্ত্বের র ভাষায় আমাদের হাঁটা, চলা, খাওয়া, কথা বলা,গান গাওয়া, নৃত্য করা, পরিধেয় পোশাক-আশাক সব কিছুই সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত।
যেমন, নারীদের ক্ষেত্রে একটি ওড়না বা শাড়ির আঁচল আংশিকভাবে ঘোমটা হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এবং ঐতিহ্যবাহী পোশাক, যেমন শাড়ি, সালোয়ার এবং কামিজ হচ্ছে বাংলাদেশের মতো একটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় দেশে নারীরা বাড়িতে এবং কর্মক্ষেত্রে পরতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করার জন্য এক ধরনের পোশাক। অনেক বাংলাদেশী নারী কপালে একটি ফোঁটা (টিপ/বিন্দিয়া) পরতে পছন্দ করেন। এটি পূর্বদেশীয় (প্রাচ্যদেশ) সংস্কৃতির নির্যাস। যাকে একটি সুপ্রাচীন বাঙালি সংস্কৃতি এবং বাংলাদেশী নারীদের অনন্য সাজ সজ্জার ধরন নির্দেশ করে। বাংলাদেশ একটি বহুসংস্কৃতির দেশ, নান্দনিকতার অংশ হিসেবে এদেশের নারীরা অনেক সময় টিপ পরিধান করেন। কোনো কোনো সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রে কপালে লাল অথবা চন্দনের ফোঁটা একটি বিশেষ সামাজিক রীতি ।
কিছুদিন আগে একজন প্রাপ্তবয়স্ক বাঙালি নারী শিক্ষাবিদ, তিনি একজন সংখ্যালঘু ও একজন অমুসলিম। তিনি প্রশাসনের একজন সদস্য দ্বারা সম্প্রতি লাঞ্ছিত হন। এটি একটি গুরুতর বিষয়, তাই একজন নারীর প্রতি নিপীড়নের জন্য শূন্য সহনশীলতা র (জিরো-টলারেন্স) আওয়াজ তোলা উচিৎ। বর্তমান ঘটনাটি একটি শিক্ষাবিদ নারীর টিপ পরা বিষয়কে কেন্দ্র করে ঘটে। এটি কোনো সাধারণ ঘটনা নয়। বর্তমান সাম্প্রদায়িক সহিংসতা এবং এই ঘটনা প্রতীয়মান করে যে অন্যান্য ধর্মের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা সম্পূর্ণ অনুপস্থিত, বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে ।
লাঞ্ছিত অধ্যাপক পুলিশকে অভিযোগ করে বলেন যে, একজন “ইউনিফর্ম পরা লোক” তাঁকে মৌখিক গালিগালাজ করে এবং তিনি এর প্রতিবাদ করেন। এরপর থেকে তিনি অনিরাপদ বোধ করছেন। হয়রানির বিষয়টি স্পষ্টতই একজন নারীর প্রতি সহিংসতা।
কিন্তু নারী ও অন্য ধর্মের মানুষের বিরুদ্ধে সহিংসতা উচিত নয়। এ বিষয়টি অগ্রহণযোগ্য।
তবে টিপ পরার জন্য একজন মহিলা অধ্যাপককে উত্ত্যক্তকারী পুলিশ কর্মচারী কে (police constable) গ্রেফতার করা হলেও তা যথেষ্ট উদ্যোগ নয়, ন্যায্য বিচার পেতে । দুই পক্ষের বক্তব্য জানা জরুরি এবং এই বিষয়টির সঠিক এবং নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া আবশ্যক।
বাংলাদেশ সরকারের উচিত বৈচিত্র্য, সমতা এবং অন্তর্ভুক্তি (DEI [Division, Equality and Inclusion policy)] নীতি মেনে চলার জন্য একটি বহুসংস্কৃতির দেশে নারীর সাথে কীভাবে আচরণ করা উচিত সে সম্পর্কে প্রশাসনকে শিক্ষিত করে গড়ে তোলা। নারীর প্রতি এই সহিংসতা অগ্রহণযোগ্য। এক্ষেত্রে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের “অ্যাডভোকেসি স্টুডেন্টস সার্ভিসেস” এবং দেশের সমস্ত সাংস্কৃতিক এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নারীদের উচিৎ, যে কোনো নারীর প্রতি এই ধরনের সহিংসতা, অন্যায় আচরণ ও বর্তমান আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া।
চাঁদ নিয়ে ছড়া এবং বিজ্ঞান সাক্ষরতা
চাঁদ এবং বিজ্ঞান শিক্ষা নিয়ে ছড়াটি এখানে চাঁদ এবং বিজ্ঞান শিক্ষা নিয়ে ছড়াটি আমি আমার শৈশবের স্মৃতি থেকে একটি মধুর উপাখ্যান বর্ণনা করছি।
“আয় আয় চাঁদ মামা
টিপ দিয়ে যা
চাঁদের কপালে চাঁদ
টিপ দিয়ে যা”
আসো, আসো! আমার প্রিয় চাঁদ মামা! দয়া করে আমার চাঁদের মত সুন্দর শিশুর কপালে একটি টিপ দিয়ে যাও। ওহে চাঁদ, আমার চাঁদের কপালে একটি টিপ দিয়ে যাও।
এটি সবচেয়ে সুন্দর ঘুমপাড়ানি গান যা আমরা শিখেছি, সম্ভবত আমরা অনেকেই এটি আমাদের বাচ্চাদের জন্য গেয়েছি। আমাদের শৈশবে, আমরা বাচ্চারা বিশ্বাস করতাম যে চাঁদ সত্যিই আমাদের কপালে একটি টিপ (একটি ফোঁটা) দিয়ে যাবে । ছড়াটি শিশুদের মনে আনন্দ দেয় , ভাবনা যোগায়, একটি সুন্দর চাঁদ, শিশুর কপালে, একটি টিপ হিসাবে স্থান নিতে পারে।
যাইহোক, একটি সংশোধিত বিজ্ঞান পাঠ্যক্রম, শ্রেণীকক্ষে কার্যকরভাবে বিজ্ঞান শিক্ষা পদ্ধতিএবং “জনপ্রিয় শিক্ষা পদ্ধতি” (রঙ্গচিত্র, নকশা, ব্যঙ্গাত্মক চিত্র ব্যবহার, গল্প বলা, ছবি দেখা) পদ্ধতির ব্যবহার, বিজ্ঞানের সাক্ষরতার প্রসার ও বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের মানসিক উন্নয়ন, সত্যিকার অর্থে আরও কয়েকটি গ্রহে নিয়ে যেতে পারে। শিক্ষার প্রাথমিক স্তরে থেকেই বিজ্ঞান শেখানোর মাধ্যমে তাঁদের বিজ্ঞান এবং নারী শিক্ষকদের লাঞ্ছনা বন্ধ করতে পারে। এবং তাদের প্রতিবেশীদের, যারা সংখ্যালঘু এবং ভিন্ন ধর্মের অন্তর্ভুক্ত, তাদেরকে ভালবাসতে সাহায্য করবে।
কোনো ঐশ্বরিক ধর্ম, মানুষ বা রাষ্ট্রকে কখনই নির্দেশ দেয়নি বিজ্ঞান শিক্ষার বিরুদ্ধে কাজ করতে । প্রকৃতপক্ষে, ইসলামের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ইসলাম ধর্ম কখনই বিজ্ঞানের প্রতি বিরূপ ছিল না। শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সহজ, কিন্তু শান্তি বজায় রাখা কঠিন। আর শান্তি বিনির্মাণ হলো সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও শান্তি রক্ষার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। আর সেজন্য সবার জন্য বিজ্ঞান শিক্ষা আবশ্যক।